ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এনসিপির নেতা মোহাম্মদ আতাউল্লাহসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দলের এক নারী সদস্যকে মারধরের অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোহাম্মদ আতাউল্লাহ (৩৪) ছাড়াও মামলায় এনসিপির বিজয়নগরের প্রধান সমন্বয়কারী ও জেলার এক নম্বর সদস্য আমিনুল হক চৌধুরী (৫০), আখাউড়ার প্রধান সমন্বয়কারী ইয়াকুব আলী (৪২), সদস্য সাকিব মিয়া (২৫) ও রতন মিয়াকে (৪২) আসামী করা হয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সদস্য ও জেলা শহরের উত্তর মৌড়াইল পুকুরপাড়ের বাসিন্দা বিপাশা আক্তার গত মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (দ্রুত বিচার) আদালতে এই মামলা দায়ের করেন। তিনি আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
মামলার আরজি সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১ মাস আগে বিপাশা সঙ্গে এনসিপি নেতা স্বামীসহ অন্যান্যরা এনসিপির ঢাকা কেন্দ্রীয় কার্যালয় যান। সেখানে তারা এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারীর সঙ্গে ছবি তুলেন। বিশাশার স্বামী কেফায়েত উল্লাহ ছবিটি আখাউড়া এনসিপি গ্রুপকে পাঠায়। এনসিপি নেতাদের বাদ দিয়ে নাসির উদ্দিন পাটোয়ারীর সঙ্গে ছবি তোলায় তারা ক্ষিপ্ত হন। এনসিপির আখাউড়ার সদস্য সাকিব বাদী সম্পর্কে কুরুচিপূর্ন বক্তব্য লিখে প্রকাশ করে। বিপাশা বিষয়টি নিয়ে এনসিপির নেতা মো. আতাউল্লাসহ অন্যান্যদেরকে জানিয়ে বিচার প্রার্থী হন। কিন্তু আতাউল্লাহ’র নির্দেশে অন্যান্য আসামীরা বিপাশাকে আরো অপমান-অপদস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে সুযোগ খুঁজতে থাকেন। বিপাশাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন এনসিপির নেতা আতাউল্লাহ। এতে রাজি না হওয়ায় অন্যান্য আসামীদের লেলিয়ে দেন আতাউল্লাহ।
গত ২৯ নভেম্বর বাদী, এনসিপির নেতাসহ স্বাক্ষীরা শহরের পৈরতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকার এনসিপির জেলার দলীয় কার্যালয়ে যান। বিপাশা বিষয়টি নিয়ে এনসিপির নেতা আমিনুল হকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এতে এনসিপির অন্যান্য নেতারা বিপাশা ও তার স্বামীর প্রতি ক্ষিপ্ত হন। সেসময় এনসিপির অন্যান্য নেতারা বিপাশাকে চরথাপ্পর মারেন। এনসিপির নেতা ইয়াকুব অন্তঃসত্ত্বা বিপাশার পেটে লাথি মারেন এবং গলা থেকে এক ভরি দুই আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেন। এনসিপির নেতারা বিপাশা ও তার স্বামীকে প্রাণনাশেরও হুমকি দেন।
এদিকে গত (২৯ নভেম্বর) দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমন্বয়ক কমিটির সদস্য মোছাঃ বিপাশা আক্তারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জেলা কমিটি।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সদস্য বিপাশা আক্তারের সাথে মোবাইল ফোনে একাদিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
এনসিপির নেতা ইয়াকুব আলী অন্তঃসত্ত্বা বিপাশার পেটে লাথি ও স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, দলীয় কার্যালয়ে ভাড়া করা সন্ত্রাসী এনে আমাকে মারধর করা হয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে আমাকে উদ্ধার করেছে। তিনি বলেন, আমাকে পার্টি অফিসে মারার ঘটনায় বিপাশা আক্তার ও তার স্বামীকে আসামী করে সদর থানায় মামলা করেছি।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোহাম্মদ রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, আমি সামনে নির্বাচন করবো তাই আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই মামলাটি করেছে। দলের কিছু ব্যক্তির ষড়যন্ত্রে ‘নারী অবমাননা’সহ কয়েকটি মিথ্যা মামলায় আমাকে জড়ানো হয়েছে। এমনকি ঢাকায় থাকলেও জেলা কার্যালয়ের হামলার ঘটনাতেও আমাকে আসামি করা হয়েছে—যা সম্পূর্ণ অন্যায়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম বলেন,মামলার বিষয়টি শুনেছি। তবে নথি এখন পর্যন্ত থানায় আসেনি।
ব্রাহ্মণ/বার্তা২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক 












