ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সশস্ত্র হামলায় ২ জন নিহত ও ৪ জন গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর এবার মূল হোতা রিফাত বাহিনীর প্রধান রিফাতকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৯। এসময় তার সহযোগীসহ আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়।
সোমবার (১০ নভেম্বর) ভোররাতে র্যাব-৯ সিপিসি-১ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি অভিযানিক দল ও জেলা পুলিশের সহায়তায় বাঞ্ছারামপুর উপজেলার উজানচর খোসকান্দি এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করে।
র্যাব প্রেস বিজ্ঞপ্তির সূত্রে জানা গেছে, নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের গণিশাহ মাজারের নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্যকে কেন্দ্র করে খোল্লাকান্দি গ্রামের রিফাত বাহিনী এবং নূরজাহানপুর গ্রামের শিপন বাহিনীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এ বিরোধ চলতি মাসের ১ নভেম্বর রাতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়।
সেদিন রাত ৮টার দিকে শিপন গণিশাহ মাজার সংলগ্ন একটি রেস্তোরায় খাবার খাওয়ার সময় রিফাত বাহিনী অতর্কিত হামলা চালায়। এতে শিপন, ইয়াসিন ও নুরআলম গুলিবিদ্ধ হন। পাল্টা হামলায় রিফাত বাহিনীর প্রতিপক্ষও অস্ত্র হাতে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, এতে এমরান মাষ্টার নামে একজন গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনাস্থলেই শিপনের মৃত্যু হয় এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইয়াসিন মারা যান।
ঘটনার পর পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে র্যাব-৯ নবীনগর ও আশপাশের এলাকায় টানা গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় গত ৭ নভেম্বর বাঞ্ছারামপুরের মরিচাকান্দি এলাকায় র্যাব ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে ৮টি পাইপগান ও ৪৫টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
পরে মূল আসামি রিফাতকে ধরতে র্যাব আরও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করে। সোমবার ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের বিশেষ দল অভিযান চালিয়ে রিফাতকে আটক করে। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে খোল্লাকান্দি গ্রামের লিমনের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। সেখানে খাটের নিচে মাটির ভিতর লুকানো অবস্থায় একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও সাত রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিফাত জানায়, সংঘর্ষের সময় তার বাহিনীর কয়েকজন সদস্য অস্ত্র হাতে হামলায় অংশ নেয় এবং ঘটনার পর তারা বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে থাকে।
র্যাব-৯ সিপিসি-১ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নুরনবী বলেন,
এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় র্যাব সর্বদা সচেষ্ট। এই সংঘর্ষের মূল হোতাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে আমরা অভিযান চালাচ্ছি। ইতোমধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে, যা তদন্তে সহায়ক হবে।
র্যাব আরো জানায়, রিফাত বাহিনীর অন্যান্য সদস্য ও অস্ত্র সরবরাহকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ব্রাহ্মণ/বার্তা২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক 

















