ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার সাতবর্গ এলাকায় শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী একটি পুকুরে বালু ভরাটকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর আয়োজিত মানববন্ধনে পুলিশ বাধা দিলে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
গতকাল রোববার (২ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৩০০ বছর পুরোনো ঐতিহ্যবাহী পুকুরটি দখল করার উদ্দেশ্যে একটি প্রভাবশালী মহল বালু ভরাটের কাজ শুরু করে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী প্রতিবাদ জানাতে মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
কিন্তু মানববন্ধন শুরু হতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে দেয়। এ সময় ইসলামপুর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মামুন উপস্থিত সাংবাদিকদের ভিডিও ধারণে বাধা দেন এবং এক সাংবাদিকের ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
পরে এসআই রফিক ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তোলেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা দেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন, ঘটনাটি ‘গুন্ডামির মতো আচরণ’ এবং পুলিশের পেশাদারিত্বের ঘাটতির স্পষ্ট প্রমাণ।
ঘটনার এক পর্যায়ে সাংবাদিকরা ব্যানার ছেঁড়ার বিষয়ে এসআই মামুনকে প্রশ্ন করলে তিনি অপেশাদার আচরণ করেন। পরে বিষয়টি ‘ম্যানেজ’ করার চেষ্টা করা হলেও সাংবাদিকরা তা প্রত্যাখ্যান করেন।
মানববন্ধনের এক পর্যায়ে বালু ভরাটের পক্ষে-বিপক্ষের হাতাহাতির ঘটনা ও ঘটে।
অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, প্রশাসনের কিছু সদস্য পুকুর ভরাটকারীদের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন। তাদের দাবি, ৩০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই পুকুরটি স্থানীয় জনজীবনের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। সাতবর্গ বাজারের শ্রমিক, মসজিদ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটায় এই পুকুরের পানি।
তারা আরও বলেন,সাতবর্গবাজারে কর্মরত শ্রমিকেদের জন্য গোসলের পানির চাহিদা পুরণ করে এবং বাজারে অবস্থিত মসজিদ মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের অযু ও গোসলের জন্য এই পুকুরটি অতিবপ্রয়োজনীয়।বাজারের কোনোধরনের অগ্নিজনিত দুর্ঘটনা থেকে রক্ষাপাওয়ার জন্য পানির চাহিদা পুরণ করে এই পুকুরটি।
এছাড়া বাজারে সম্ভাব্য অগ্নিকাণ্ডের সময় পানির সরবরাহেও এই পুকুরটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। পুকুরের চারপাশে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী শাহজালাল মসজিদ, একটি মন্দির, সাতবর্গ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সাতবর্গ উচ্চ বিদ্যালয়।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, পুকুরটির মোট আয়তন প্রায় ৮২ শতাংশ, যার কিছু অংশ সরকারি মালিকানাধীন এবং বাকিটা সাতবর্গ উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে বরাদ্দ। ২০২১-২২ অর্থবছরে ২ লাখ টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন ঘাটলা নির্মাণ করা হয়।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার সৃষ্টি হয়েছে। তারা দ্রুত তদন্ত করে দোষী পুলিশ সদস্য ও পুকুর ভরাটকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
এ সময় ঘটনাস্থলে জনকণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার,হীরা আহমেদ জাকির,এনটিভি অনলাইন প্রতিনিধি,শাহনেওয়াজ শাহ,ফেস দ্যা পিপল এর জেলা প্রতিনিধি,এস এম কিবরিয়া,বাংলা এডিশনের জেলা প্রতিনিধি,সজিব হাসান,মাছারাঙা টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি,হিমেল সহ স্থানীয় সাংবাদিকেরা মানববন্ধন কাভার করতে যায়,
এ ছাড়া ইউএনও বরাবর এলাকাবাসীর পক্ষ হতে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে,অবৈধ বালি ভড়াটের দায়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
এ বিষয়ে বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো:শহিদুল ইসলাম বলেন,আমি ক্যামেরায় বক্তব্য দিতে চাইনা,বিষয়টি উর্ধতন কর্মকর্তারা দেখছেন,ঘটনাস্থলে এস আই মামুনের কার্যবিধি অপেশাদার বলে তিনি জানান।তার বিরুদ্ধে অফিসিয়ালি একশন নেওয়া হবে।
ব্রাহ্মণ/বার্তা২৫
















