ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় পূর্ব শত্রুতার জেরে ইয়াদ মোল্লা খাদেম কে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত ২৮ মার্চ দুপুরে জেলার আখাউড়া পৌরসভার খড়মপুর তিতাস নদীর পাড়ে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে হত্যা করেছেন বলে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনার বিচার চেয়ে গত ৭ এপ্রিল নিহত ইয়াদ মোল্লা খাদেমের স্ত্রী আছমা বেগম বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।
মামলার আসামীরা হলেন-আখাউড়া পৌরসভার খড়মপুর গ্রামের মৃত হিরণ খান খাদেমের ছেলে সোহেল খান খাদেম, মৃত পৈলান খান খাদেমের ছেলে তাকদীর খান খাদেম, মৃত বাচ্চু খাদেমের ছেলে কাজী জামান খাদেম, মৃত সিরাজুল হক ওরফে এলু খাদেমের ছেলে মোজাম্মেল হক খাদেম, মৃত জারু খান খাদেমের ছেলে হাসান খান খাদেম, মৃত করিম নেওয়াজ খান খাদেমের ছেলে ছালে নেওয়াজ খান খাদেম, মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে শাহজাদা খাদেম ও মৃত আলম খাদেমের ছেলে মিন্টু খাদেম।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, বাদীপক্ষ ও আসামীগণের মধ্যে পূর্ব থেকেই একাধিক মামলা মোকদ্দমা চলমান রয়েছে। পূর্ব থেকেই আসামী সোহেল খান খাদেম নিহত ইয়াদ মোল্লা খাদেমের পরিবারের লোকজনকে খুন জখম করবে বলে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছিল। নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ মার্চ সকালে নিহত ইয়াদ মোল্লা গরুকে ঘাস খাওয়ানোর জন্য তিতাস নদীর পাড়ে যান। দুপুরে স্থানীয় লোকজন ইয়াদ মোল্লার লাশ দেখতে পেয়ে পরিবারকে খবর দেয়। পরে পরিবারের লোকজন গিয়ে লাশ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে। এছাড়া ইয়াদ মোল্লা নিহতের ১৫ দিন আগে সোহেল খান খাদেম প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ করেন ইয়াদ মোল্লার স্বজনরা। প্রতিপক্ষের লোকজন পরিকল্পিতভাবে ইয়াদ মোল্লাকে হত্যা করে মহিষের গুঁতোয় মৃত্যু হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারের লোকজনের।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত সোহেল খান খাদেম বলেন, “এবিষয়ে আমি কোনো কথা বলতে পারব না।” অভিযুক্ত তাকদীর খান খাদেম বলেন, “এইটাতো সবাই জানে ইয়াদ মোল্লা কিভাবে মারা গেছে, ভিডিও ভাইরাল হইছে। আমরা শুনছি, ভিডিওর মধ্যে দেখছি একটা ছেলে লাইভ করছে, গরু না মহিষের গুঁতোয় মরছে, সে ভিডিওর মধ্যে বলছে, আমরাও দেখিনাই, সে দেখছে কিনা সেটা তো সে বলতে পারবে। মামলা দিলে তো আর কিছু করার নাই, দিছে ফেইস করতে হবে। ইয়াদ মোল্লা খাদেমের সাথে আমাদের পরিবারের বা আমাদের গোষ্ঠীর এরকম কোনো সম্পত্তির মামলা আমাদের বাপ দাদার আমলেও ছিল কিনা আমি জানিনা। তাদের সম্পত্তি এই গ্রামে আদৌ আছে কিনা এইটাও আমরা জানিনা। আমরা তো জানি তারা আরেকজনের যায়গায় থাকে। ইয়াদ মোল্লা থাকে শাহজাদা খাদেম, কাদের খাদেমের যায়গাতে। আমরা তো শুনছি, বাস্তবে তো কাগজপত্র দেখিনাই। আমাদের সাথে ইয়াদ মোল্লার কোনো ঝগড়া ফ্যাসাদ নাই। তাদের সাথে আমার যায়গার কোনো সম্পৃক্ততা নাই।”
আখাউড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শাহীনূর ইসলাম বলেন, “ খবর পেয়ে মৃত ব্যক্তির বাড়িতে যায়। সুরতহাল কমপ্লিট করি। সুরতহাল করা কালীন তার শরীরের পা থেকে মাথা পর্যন্ত সব যায়গা দেখা হয়। কিন্তু সেখানে কোনো ক্ষত কিংবা আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি একমাত্র বাম পায়ে হাটুর উপরে দুই ইঞ্চি লম্বা এবং দেড় ইঞ্চি গর্ত একটি কাঁটা দাগ দেখা যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যায়, রক্তক্ষরণে সে মারা গেছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আসার পর কিভাবে মৃত্যু বরণ করেছে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
ব্রাহ্মণ/বার্তা২৫