ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। আপডেট নিউজ থিমটি ক্রয় করতে আমাদের কল করুন 01732667364। আমাদের আরো নিউজ থিম দেখতে ভিজিট করুন www.themesbazar.com

ঈদের দিনেও বেওয়ারিশ লাশ দাফন করলো ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’

পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনেও ট্রেনে কাটা অজ্ঞাতনামা (৪০) এক ব্যক্তির বেওয়ারিশ লাশ দাফন করেছে ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’।

সোমবার (৩১ মার্চ) বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পূর্ব মেড্ডা তিতাস নদী সংলগ্ন বেওয়ারিশ লাশের কবরস্থানে লাশটি দাফন করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আজহার উদ্দিন জানান, গত শনিবার (২৯ মার্চ) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার পাঘাচং ও আখাউড়ার বাইপাসের মধ্যবর্তী রেললাইনে ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাতনামা (৪০) এক ব্যক্তি নিহত হয়। অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত হয়নি বলে পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন সোমবার (৩১ মার্চ) বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের উদ্যোগে অজ্ঞাত বেওয়ারিশ লাশের দাফনকাজ সম্পন্ন করেছি।

তিনি আরও জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর প্রতিষ্ঠার ৪ বছরের মধ্যেই প্রায় ২০০ রেওয়ারিশ লাশ দাফন করেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পরিচয়হীন লাশ আসলেই ডাক পড়ে এ বাতিঘরের। আমার নিজস্ব ও পারিবারিক অর্থায়নে বেওয়ারিশ লাশ দাফন করি।  কারও কাছ থেকে কোন ধরণের সাহায্য সহযোগিতা নেইনা। তবে বেওয়ারিশ লাশ দাফনের ক্ষেত্রে যেকেউ কাফনের কাপড়, বাঁশ ও দাঁড়ি বা চাটাই দিতে পারবে।

আখাউড়া রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জসিম উদ্দিন জানান, ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত অজ্ঞার ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তের জন্য পিবিআইকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিতে বলা হয়। অজ্ঞাত বৃদ্ধের পরিচয় শনাক্ত হয়নি তাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যানের কাছে লাশ দাফনের চিঠি পাঠায়। তারা ইসলামী নিয়মনীতি মেনে সুন্দর ভাবে বেওয়ারিশ লাশ দাফন-কাফন করে।

তিনি আরও জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বেওয়ারিশ লাশ দাফনের একমাত্র সংগঠন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর। আমরা কোন বেওয়ারিশ লাশ উদ্ধার করলে পিবিআইয়ের ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ময়নাতদন্তের পর লাশ দাফনের জন্য বাতিঘরকে জানায়। বেওয়ারিশ লাশ দাফনের ক্ষেত্রে তারা কোন খরচ নেই না।

উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করোনায় আক্রান্তদের লাশ দাফনে সহায়তা করতেই ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’ নামে এ সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন ইঞ্জিনিয়ার আজহার উদ্দিন। ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি সংগঠনটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে।

এরপর থেকে এ পর্যন্ত বাতিঘর ১৮৯ জনের বেওয়ারিশ লাশ  দাফনকাজ সম্পন্ন করেছে। এর মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় বাতিঘর-বেওয়ারিশ লাশের লাশ শেষ ঠিকানা পরিণত হয়েছে। এ সংগঠনটি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া একাধিক ব্যক্তির লাশ দাফন করেছে। পাশাপাশি স্বেচ্ছায় রক্ত দিয়ে সহযোগিতা করে সাধারণ মানুষের কাছেও জনপ্রিয়।

 

মূলত ট্রেনে কাটা পড়ে ও মহাসড়কে দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া লাশগুলোই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বেওয়ারিশ হয়। এ ছাড়া মাঝে মাঝে বৃদ্ধ/বৃদ্ধা ও নবজাতকের লাশও পাওয়া যায়।

হাসপাতাল ও পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আজহার উদ্দিন এবং সদস্যরা লাশ দাফনের কাজে এগিয়ে আসেন। বেওয়ারিশ লাশ এলেই হাসপাতালের মর্গ ও পুলিশ-প্রশাসন থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরকে আহ্বান জানান দাফন কাজ করে দেওয়ার জন্য।

ব্রাহ্মণ /বার্তা২৫

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ঈদের দিনেও বেওয়ারিশ লাশ দাফন করলো ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’

আপডেট সময় ০৩:৩০:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫

পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনেও ট্রেনে কাটা অজ্ঞাতনামা (৪০) এক ব্যক্তির বেওয়ারিশ লাশ দাফন করেছে ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’।

সোমবার (৩১ মার্চ) বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পূর্ব মেড্ডা তিতাস নদী সংলগ্ন বেওয়ারিশ লাশের কবরস্থানে লাশটি দাফন করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আজহার উদ্দিন জানান, গত শনিবার (২৯ মার্চ) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার পাঘাচং ও আখাউড়ার বাইপাসের মধ্যবর্তী রেললাইনে ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাতনামা (৪০) এক ব্যক্তি নিহত হয়। অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত হয়নি বলে পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন সোমবার (৩১ মার্চ) বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের উদ্যোগে অজ্ঞাত বেওয়ারিশ লাশের দাফনকাজ সম্পন্ন করেছি।

তিনি আরও জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর প্রতিষ্ঠার ৪ বছরের মধ্যেই প্রায় ২০০ রেওয়ারিশ লাশ দাফন করেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পরিচয়হীন লাশ আসলেই ডাক পড়ে এ বাতিঘরের। আমার নিজস্ব ও পারিবারিক অর্থায়নে বেওয়ারিশ লাশ দাফন করি।  কারও কাছ থেকে কোন ধরণের সাহায্য সহযোগিতা নেইনা। তবে বেওয়ারিশ লাশ দাফনের ক্ষেত্রে যেকেউ কাফনের কাপড়, বাঁশ ও দাঁড়ি বা চাটাই দিতে পারবে।

আখাউড়া রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জসিম উদ্দিন জানান, ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত অজ্ঞার ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তের জন্য পিবিআইকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিতে বলা হয়। অজ্ঞাত বৃদ্ধের পরিচয় শনাক্ত হয়নি তাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যানের কাছে লাশ দাফনের চিঠি পাঠায়। তারা ইসলামী নিয়মনীতি মেনে সুন্দর ভাবে বেওয়ারিশ লাশ দাফন-কাফন করে।

তিনি আরও জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বেওয়ারিশ লাশ দাফনের একমাত্র সংগঠন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর। আমরা কোন বেওয়ারিশ লাশ উদ্ধার করলে পিবিআইয়ের ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ময়নাতদন্তের পর লাশ দাফনের জন্য বাতিঘরকে জানায়। বেওয়ারিশ লাশ দাফনের ক্ষেত্রে তারা কোন খরচ নেই না।

উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করোনায় আক্রান্তদের লাশ দাফনে সহায়তা করতেই ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’ নামে এ সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন ইঞ্জিনিয়ার আজহার উদ্দিন। ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি সংগঠনটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে।

এরপর থেকে এ পর্যন্ত বাতিঘর ১৮৯ জনের বেওয়ারিশ লাশ  দাফনকাজ সম্পন্ন করেছে। এর মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় বাতিঘর-বেওয়ারিশ লাশের লাশ শেষ ঠিকানা পরিণত হয়েছে। এ সংগঠনটি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া একাধিক ব্যক্তির লাশ দাফন করেছে। পাশাপাশি স্বেচ্ছায় রক্ত দিয়ে সহযোগিতা করে সাধারণ মানুষের কাছেও জনপ্রিয়।

 

মূলত ট্রেনে কাটা পড়ে ও মহাসড়কে দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া লাশগুলোই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বেওয়ারিশ হয়। এ ছাড়া মাঝে মাঝে বৃদ্ধ/বৃদ্ধা ও নবজাতকের লাশও পাওয়া যায়।

হাসপাতাল ও পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আজহার উদ্দিন এবং সদস্যরা লাশ দাফনের কাজে এগিয়ে আসেন। বেওয়ারিশ লাশ এলেই হাসপাতালের মর্গ ও পুলিশ-প্রশাসন থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরকে আহ্বান জানান দাফন কাজ করে দেওয়ার জন্য।

ব্রাহ্মণ /বার্তা২৫